চিতা ও চিতাবাঘের পার্থক্য


 চিতা ও চিতাবাঘের পার্থক্য

চিতা (Cheetah) এবং চিতাবাঘ (Leopard) দুটোই বড় বিড়াল জাতীয় প্রাণী, কিন্তু এদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। নিচে তাদের মধ্যে প্রধান পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো:

চিতা ও চিতাবাঘের পার্থক্য
  1. শারীরিক গঠন ও আকার:

    • চিতা: চিতার শরীর লম্বাটে এবং পাতলা, যা তাকে দ্রুত দৌড়ানোর ক্ষমতা প্রদান করে। তার পা দীর্ঘ এবং পাতলা। চিতার গায়ে ছোট ছোট কালো দাগ থাকে এবং দাগগুলি সাধারণত গোলাকৃতির।
    • চিতাবাঘ: চিতাবাঘের শরীর বেশ মজবুত ও শক্তিশালী। এর পা তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক দৈর্ঘ্যের এবং গায়ে বড় বড় গোলাকার দাগ থাকে।
  2. স্পিড:

    • চিতা: চিতা পৃথিবীর দ্রুততম স্থলপ্রাণী, যা ঘণ্টায় ৭০ মাইল বা ১১০ কিমি গতিতে দৌড়াতে পারে।
    • চিতাবাঘ: চিতাবাঘের গতি কম হলেও, এটি দক্ষ শিকারী এবং আরো শক্তিশালী।
  3. ডেইলিভারি:

    • চিতা: চিতার মুখে কালো স্ট্রাইপ থাকে যা চোখ থেকে মুখের কোণ পর্যন্ত চলে, যা তার শিকারের দৃষ্টি সীমিত করার জন্য সাহায্য করে।
    • চিতাবাঘ: চিতাবাঘের মুখের স্ট্রাইপ বা রেখা নেই। তার মুখ সাধারণত সোজা।
  4. অবস্থান ও পরিবেশ:

    • চিতা: চিতা সাধারণত আফ্রিকার সাভানাস ও খোলা বনভূমিতে বাস করে। এটি খোলা মাঠে দ্রুত দৌড়ানোর জন্য উপযুক্ত।
    • চিতাবাঘ: চিতাবাঘ বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে বাস করতে পারে, যেমন জঙ্গল, বনভূমি, এবং পাহাড়ি এলাকা। এটি আরো অভিযোজিত এবং বেশি ফাঁকা জায়গার পরিবর্তে ঘন বনাঞ্চলে থাকতে পারে।
  5. আচরণ ও শিকার:

    • চিতা: চিতার শিকারের ধরন হলো দৌড়ে ধাওয়া করে শিকার ধরা, এবং এটি সাধারণত দিনের বেলায় শিকার করে।
    • চিতাবাঘ: চিতাবাঘ শিকার করার সময় লুকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় এবং রাতে বেশিরভাগ শিকার করে।

এছাড়া আরো কিছু বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে, তবে এদের মধ্যে প্রধান পার্থক্যগুলো হলো তাদের শারীরিক গঠন, গতি, ও বাসস্থানের ধরন।

চিতা বাঘের বৈশিষ্ট্য

চিতা বাঘ (Cheetah) হল এক ধরনের বিড়াল যা আফ্রিকা এবং কিছু অংশে ইরানে পাওয়া যায়। এটি বিশ্বের দ্রুততম স্থলবাহন প্রাণী হিসেবে পরিচিত। চিতা বাঘের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:

  1. দ্রুতগতি: চিতা বাঘ সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ১০০ কিমি/ঘণ্টা গতি অর্জন করতে পারে, যা এটি অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় দ্রুততম করে তোলে। এটি ০ থেকে ১০০ কিমি/ঘণ্টা গতি মাত্র ৩ সেকেন্ডে অর্জন করতে সক্ষম।

  2. দীর্ঘ শরীর ও পা: চিতা বাঘের শরীর পাতলা এবং লম্বা, এবং এর পা অনেক লম্বা, যা দ্রুত দৌড়ানোর জন্য সাহায্য করে।

  3. বিশেষ ধরনের পেশী: চিতার পেশী গঠনে বিশেষ ধরনের এবং এটি তাদের দ্রুতগতি বজায় রাখতে সহায়তা করে।

  4. স্বল্প সহনশীলতা: চিতারা দীর্ঘ সময় ধরে দ্রুতগতি বজায় রাখতে সক্ষম নয়, সাধারণত তারা ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ডের জন্য দ্রুত দৌড়াতে পারে, এরপর তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

  5. বিভিন্ন দাগ: চিতার শরীরে ছোট ছোট কালো দাগ থাকে, যা তাকে তাদের পরিবেশে মিশে যেতে সাহায্য করে এবং শিকার ধরতে সুবিধা করে।

  6. বিশেষভাবে গঠন করা শ্বাসনালী: চিতার শ্বাসনালী দীর্ঘ ও সরু, যা দ্রুতগতির সময় যথাযথ পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ করে।

  7. মুখের গঠন: চিতার মুখের গঠন অন্য বিড়ালদের তুলনায় একটু ভিন্ন। তাদের মুখের হাড়গুলো অতি পাতলা এবং কপাল নিচু, যা তাদের উচ্চ গতির জন্য সুবিধাজনক।

  8. গলা ও চোখ: চিতার চোখের কোণে একটি কালো দাগ থাকে, যা সানলাইটের প্রতিবিম্ব কমিয়ে দিতে সাহায্য করে এবং তাদের চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করে।

চিতা ও চিতাবাঘের বৈশিষ্ট্য

এছাড়াও, চিতা বাঘের সামাজিক জীবন বেশ একক এবং তারা একাকী থাকতে পছন্দ করে। তাদের শিকার ধরার সময় তারা কৌশলগতভাবে দ্রুত দৌড়ানোর ক্ষমতা ব্যবহার করে, যা তাদের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

চিতা বাঘের বাসস্থান

চিতা বাঘের (চিতা বা চিতার) প্রাকৃতিক বাসস্থান মূলত আফ্রিকা এবং এশিয়ার কিছু অংশে বিস্তৃত। আফ্রিকাতে, চিতা বাঘেরা সাধারণত সাভানা, খোলা বনভূমি, এবং মেসা অঞ্চলে বাস করে, যেখানে তারা দ্রুত দৌড়াতে এবং শিকার করতে পারে। আফ্রিকান চিতার বাসস্থান আফ্রিকার অধিকাংশ প্রান্তে পাওয়া যায়, তবে সুরক্ষার অভাবে তাদের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে।

এশিয়াতে, চিতার একটি ছোট গ্রুপ ভারত ও ইরানে দেখা যায়। ভারতীয় চিতার প্রজাতি মূলত ভারতীয় উপমহাদেশে বাস করে, যেখানে তারা কমপক্ষে ৭০ বছর আগে পর্যন্ত প্রচলিত ছিল, কিন্তু বর্তমানে তাদের সংখ্যা খুবই কম এবং ইরানে বেশ কিছু সংখ্যক চিতা অবশিষ্ট আছে।

চিতা ও চিতাবাঘের পার্থক্য

চিতার বাসস্থান মূলত তৃণভূমি ও খোলা বনভূমিতে, যেখানে তারা স্বাভাবিক শিকার করতে পারে এবং দ্রুতগতিতে দৌড়াতে সক্ষম হয়। তাদের বাসস্থানের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চিতা বাঘের গতিবেগ

চিতা বাঘ, যা সাধারণভাবে "চিতা" নামে পরিচিত, হল পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত গতির স্থল প্রাণী। এটি ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ মাইল (১১০ থেকে ১২৫ কিমি) গতিতে দৌড়াতে সক্ষম। তাদের এই অসাধারণ গতির কারণে তারা সহজে শিকার ধরতে পারে এবং সাধারণভাবে তার গতি ৩০ থেকে ৪০ মাইল (৪৮ থেকে ৬৪ কিমি) প্রতি ঘণ্টায় থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url